কেনগালে হনুমানের রহস্য
ভারতের সংস্কৃতি শুধু প্রাচীনই নয়, বরং আজও মানুষকে টানে তার রহস্য আর শক্তিতে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমাদের মন্দির আর আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে গবেষণা হয়েছে, কিন্তু বিশ্বাস করুন, বিজ্ঞানীরা এখনো এর একটুকুও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি। ভক্তরা বলেন—এটা ভগবানের শক্তি। আর বিজ্ঞানীরা খোঁজেন এর পিছনে যুক্তি। আসল সত্যি হলো, প্রাচীন মন্দিরগুলোর মধ্যে এক অদ্ভুত এনার্জি আছে, যা মানুষকে শান্তি আর ভরসা দেয়।
মন্দিরের গল্প
বেঙ্গালুরু থেকে চান্নাপাট্টনার দিকে গাড়ি নিয়ে গেলে, ন্যাশনাল হাইওয়ে ২৭৫-এর ধারে চোখে পড়বে এক অসাধারণ মন্দির—শ্রী কেনগাল অঞ্জনেয়া স্বামী মন্দির। ভগবান হনুমানকে উৎসর্গীকৃত এই মন্দিরের শিকড় নাকি হোয়সলা যুগ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
‘কেনগাল’ নামের ভেতরেই লুকিয়ে আছে মন্দিরের বিশেষত্ব। “কেম্পু” মানে লাল, আর “কল্লু” মানে পাথর। ঠিক সেই লাল পাথর দিয়েই গড়া হয়েছে ভগবান হনুমানের মূর্তি। প্রায় ৫.৫ ফুট উঁচু এই প্রতিমা যেন নিজে থেকেই সিঁদুরে মোড়া। দাঁড়িয়ে থাকা হনুমানের এই রূপ শুধু চোখ ধাঁধানোই নয়, ভক্তদের মনে তৈরি করে অসংখ্য রহস্য আর গভীর বিশ্বাস।
রহস্যের ছোঁয়া
এই মন্দির নিয়ে যে বিশ্বাস ভক্তদের সবচেয়ে টানে, তা হলো—মূর্তিটি নাকি প্রতি বছর সামান্য করে বড় হচ্ছে! আরও আশ্চর্যের কথা হলো—হনুমানের দৃষ্টি ধীরে ধীরে উত্তর দিক থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে বলে বিশ্বাস করা হয়। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই, তবে এই বিশ্বাসই মন্দিরকে ঘিরে তৈরি করেছে এক অলৌকিক আবহ, যা ভক্তদের আস্থাকে আরও দৃঢ় করে।
মন্দিরের শক্তি
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তি-র দিনে, অর্থাৎ উত্তরায়ণের প্রথম দিনে, সূর্যের আলো একেবারে সোজা এসে পড়ে ভগবান হনুমানের ওপর। ভক্তরা একে অত্যন্ত শুভ মনে করেন। এখানকার আরেকটি জনপ্রিয় বিশ্বাস হলো—১২ বার প্রদক্ষিণ করলে নাকি যে কোনো মানত পূর্ণ হয়। যুগ যুগ ধরে অসংখ্য ভক্ত এখানে এসে মানসিক শান্তি আর ভগবানের আশীর্বাদ নিয়ে গিয়েছেন।
শেষকথা
শ্রী কেনগাল অঞ্জনেয়া স্বামী মন্দির কোনো সাধারণ মন্দির নয়। এখানে এলে সত্যিই মনে হয়—বিশ্বাস আর রহস্য একসাথে কাজ করছে। একবার গেলে আপনি টের পাবেন—শান্তি আর শক্তি, দুটোই যেন আপনাকে ঘিরে ধরছে। আর হনুমানের আশীর্বাদ ভরিয়ে দিচ্ছে ভেতরটা।